২০২০ সালটি মানব ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে যে কারনে , তা হল করোনা।এখন প্রশ্ন হল করোনা আর কতদিন থাকবে , কিংবা আমরা কিভাবে এর সংক্রমণের ঝুকি হ্রাস করে আমাদের জীবনকে এগিয়ে নিতে পারি।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে এযাবৎ যতটুকু জানাগেছে তাতে এটি ড্রপলেট হিসাবে হাঁচি , কাশি ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়। ধারণা করা হয় ফমাইট হিসাবে কোন বস্তুতে লেগে থাকলেও , তা অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে।
এবার আসুন জেনে নেই এয়ার কন্ডিশন বা এসি কিভাবে কাজ করে। সহজ করে বললে এসি একটি বদ্ধ জায়গার ভিতরের বাতাস কে প্রতিনিয়ত ফিল্টার বা পরিশোধিত করে পুনরায় উক্ত জায়গায় প্রবাহিত করে।
প্রশ্ন উঠেছে বদ্ধ জায়গার বাতাসে আক্রান্ত বাক্তি থেকে অন্যদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কি বেড়ে যায় !!
এই ব্যাপারে চিনের জুয়াঙ্গিও রাজ্যের একটি রেস্টুরেন্টে একজন আক্রান্ত বাক্তি থেকে ৯ জন আক্রান্ত হবার রিপোর্ট প্রকাশের পর সবাই নড়েচড়ে বসে।এসির সাথে করোনা সংক্রমণের ঝুকির প্রাথমিক ধারণা তখনই তৈরি হয়।
ইউনিভারসিটি অফ বন , জারমানির এরগান গেবেল এর মতে , এসির মাধ্যমে বদ্ধ জায়গায় ড্রপলেট স্তানান্তর সম্ভব ।
ইন্ডিয়ানার পারডূ ইউনিভারসিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রোফেসর ইয়েন চেন এর মত খানিকটা ভিন্ন।উনি মনে করেন সাধারনভাবে এসি করোনা সংক্রমণে কোন বাড়তি ঝুকি তৈরি করে না , তবে বাতাসের প্রবাহ ও এসিতে কোন ধরনের ফিল্টার ব্যাবহার করা হয় – এই বিষয়গুলো ঝুকি বৃদ্ধির সাথে জড়িত থাকতে পারে।
বাক্তিগত পর্যায়ে বাসা বাড়িতে এসি ব্যাবহারে করোনা সংক্রমণের ঝুকির কোন তারতম্য হয় না বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।তবে যে স্থানে অনেক লোকের সমাগম হয় এবং যেখানে দীর্ঘ সময় অনেক মানুষ একসঙ্গে থাকে যেমন, এসি বাস, এসি অফিস, এসি ব্যাংক, এসি ট্রেন, বিমান ইত্যাদি স্থানে সংক্রমণের ঝুকি তুলনামূলক বেশি বলে ধারণা করা হয়।
বিমানের এসিতে HEPA ফিল্টার ব্যাবহার করা হয় বলে সংক্রমণ ঝুকি কম- এমনটাই মনে করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা যাত্রী পরিবহণের পূর্বেই এসি চালু করার পরামর্শ দেন।
পাবলিক অফিসগুলু যেখানে এসি ব্যাবহার করা হয় , অথবা গনপরিবহনে এসির ব্যাবহার কমিয়ে , জানালা খুলে বাতাসের প্রবাহ বজায় রাখতে পারলে , সংক্রমণ ঝুকি হ্রাস করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
করোনাকে সাথে নিয়ে আমাদের যে পথ চলা তা কবে থামবে , আমরা কেউই জানিনা।তাই সঠিক জীবন যাপন পদ্ধতি অবলম্বন করাই সবচে সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত।
লেখকঃ DR. ABU RAYHAN SIDDIQUE
ASSTT. REGISTRAR (SURGERY)
SHAHEED TAJUDDIN AHMAD MEDICAL COLLEGE HOSPITAL
তথ্য সূত্রঃ 1. CDC (Emerging infectious disease) , vol: 26, Number:7, july-2020
2. DEUTSCHE WELLE (D/W) NEWS